কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরসভার বাটিকামারা এলাকার আনসার এগ্রো ফুড প্রোডাক্টসের অটো চালকলে প্রস্তুত হচ্ছে মামা – ভাগ্নে, সুপার স্বর্ণা, আহাদ স্পেশাল, সাফি স্পেশাল, নয়ন এগ্রো ফুড, এফআরআর সহ বিভিন্ন নামীদামী ব্র্যান্ডের চাল। চালের বস্তায় নেই উৎপাদনের মেয়াদ।
অথচ এসব চাল প্রস্তুতের খাদ্যগুদাম কর্তৃক নেই কোনো অনুমতি। এছাড়াও চালকলে নষ্ট হচ্ছে বিপুল পরিমান চাল ও ধান। দীর্ঘদিন ধরে চাল ও ধান মজুদ রাখায় অসংখ্য বস্তায় বেঁধেছে মাকড়সা বাসা।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আনসার এগ্রো ফুড প্রোডাক্টস অটো চালকলে অভিযান চালায় উপজেলা প্রশাসন। এসময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিতান কুমার মন্ডল, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শাহীদুল ইসলাম, উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. এরশাদ আলী, চালকলের পরিচালক ও উপজেলা যুবদলের আহবায়ক জাকারিয়া প্রামাণিক মিলন সহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
অভিযানে ওই চালকলে এমন অনিয়মের চিত্র উঠে আসে। তবে খাদ্য গুদাম কর্তৃক পূর্ব নির্ধারিত কোনো নির্দেশনা প্রদান না করায় আইনগত ব্যাবস্থা নেয়নি প্রশাসন। এসংক্রান্ত সরকারি নির্দেশনা মেনে চলতে মালিককে সতর্ক করেছেন প্রশাসন।
দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, চালকলের সাইনবোর্ডে লেখা রয়েছে ” আনসার এগ্রো ফুড প্রোডাক্টস “। এখানে সম্পূর্ণ অটোমেটিক মেশিনে ধান থেকে চাল তৈরি, বাছাই প্রস্তুত করে পাইকারী দরে বিক্রি করা হয়। কিন্তু চালকলের ভিতরের চিত্র ভিন্ন। শুধু আনসার সুপার চাল নয়, প্রস্তুত করা হচ্ছে মামা – ভাগ্নে, সুপার স্বর্ণা, আহাদ স্পেশাল, সাফি স্পেশাল, নয়ন এগ্রো ফুড, এফআরআর সহ বিভিন্ন নামীদামী ব্র্যান্ডের চাল। এগুলো কুষ্টিয়ার খাজানগর, কবুরহাট সহ বিভিন্ন এলাকার প্রতিষ্ঠানের নাম। চালের বস্তায় নেই উৎপাদনের মেয়াদ।
আরো দেখা গেছে, চালকলে নষ্ট হচ্ছে বিপুল পরিমান চাল ও ধান। দীর্ঘদিন ধরে চাল ও ধান মজুদ রাখায় অসংখ্য বস্তায় বেঁধেছে মাকড়সা বাসা।
এবিষয়ে অভিযান চলাকালীন সময়ে আনসার এগ্রো ফুড প্রোডাক্টসের পরিচালক এ্যাড. জাকারিয়া আনসার মিলন বলেছেন, ‘ বিভিন্ন লোকজন ও এগ্রো কোম্পানি তাঁদের মিল থেকে চাল প্রস্তুত করে নিয়ে যান। কিন্তু বিষয়টি খাদ্য গুদামকে জানানো হয়নি।’
এবিষয়ে বিস্তারিত জানতে বিকেলে এই পরিচালকরের মুঠোফোনে কল দেওয়া হয়। কলে তিনি বলেন, ‘ মুঠোফোনে তো এসব কথা বলা যায়না। রাত ৮ টায় অফিসে আসেন। বিস্তারিত সামনাসামনি বলা যাবে।’
জানতে চাইলে কুষ্টিয়ার খাজানগর এলাকার সাফি এগ্রো ফুড প্রোডাক্টসেরর পরিচালক তুহিনুজ্জামান হালিম মুঠোফোনে বলেন, ‘ এখন আমার ব্যবসা ছোট হয়েছে। তাই আনসার এগ্রো ফুড থেকে চাল প্রস্তুত করি। তবে বস্তায় লাগানো লগোতে ঠিকানা পরিবর্তন করা হয়নি। আমার অন্যায় হয়েছে।’
জানতে চাইলে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. এরশাদ আলী বলেন, ‘ আনসার এগ্রো ফুড প্রোডাক্টসে আজ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে বিভিন্ন নামীদামী ব্র্যান্ডের চাল প্রস্তুতের নমুনা পাওয়া গেছে। যা নিয়ম বহির্ভূত। মূলত এক কলে অন্য কলের চাল প্রস্তুত করতে হলে খাদ্য গুদামের অনুমতি নিতে হয়।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মন্ডল বলেন, ‘ আনসার এগ্রো ফুড প্রোডাক্টসে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের চাল প্রস্তুত করা হচ্ছে। এবিষয়ে খাদ্য গুদাম কর্তৃক পূর্ব নির্দেশনা প্রদান না করায় মিলের পরিচালককে সতর্ক করা হয়েছে।’