শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১:০১ পূর্বাহ্ন

কুমারখালীতে বালিতে ডুবে গেছে ৪৬ বাড়ি!

মো. মমিন হোসেন / ১৭৮১ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম: শুক্রবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২১, ৯:০১ পূর্বাহ্ন

বালিতে ডুবে গেছে ঘর। বাধ্য ঘর ছেড়ে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে ৪৬ পরিবার। অনেকেরই ভরসা এখন খোলা আকাশ! করোনা মহামারির মধ্যেই আরেক মহামারিতে পড়েছে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর চাঁপড়া ইউনিয়নের বহলা গোবিন্দপুর গ্রামে। আর এই দুঘর্টনাটি ঘটেছে গড়াই নদীতে অপরিকল্পিত ড্রেজিংয়ের কারণে- এমন দাবি স্থানীয়দের।

ভুক্তভোগীরা জানান, এমন ভাবে বালি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে, বাড়ির চাল সমান বালি। টিউবওয়েল, বাথরুম, রান্নাঘরসহ যা কিছু ছিল সব বালির নিচে চাপা পড়েছে। রান্না করারও জায়গায় নেই। বাধ্য হয়ে তাকিয়ে আছে অন্যের দিকে। এভাবে চলতে থাকলে ছেলে-মেয়ে নিয়ে না খেয়ে মরতে হবে।

সূত্র জানায়, বর্তমানে যে জায়গাটি বালি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে তা এক সময় ছিল মালিকাধীন জায়গা। সরকারি খাল খননের জন্য সেই জায়গা অধিগ্রহণ করে জিকে। সেখানে বসবাসরত পরিবারগুলো ঘর-বাড়ি ভেঙে গড়াই নদীর পাশে নতুন করে বসবাস শুরু করে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস! নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায় তাদের শেষ আশ্রয়স্থল। কোনো উপায় না পেয়ে নদীগর্ভে বিলীন হওয়া আশ্রয়হারা অসহায় পরিবারগুলো পুনরায় বাস শুরু করে জিকের অধিগ্রহণ নেওয়া জায়গাতে।

সূত্রটি আরও জানায়, জীবন-যাপনের জন্য কোনরকম বাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করে আসছিল তারা। কিন্তু সম্প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আঁতাত করে গড়াই নদী খনন প্রকল্পের ঠিকাদারের স্বার্থ হাসিলের বলি হয়ে বাড়ি ছাড়া হয়েছে ওই অঞ্চলের প্রায় শতাধিক পরিবার। বালির নিচে তলিয়ে গেছে অর্ধশত বাড়িঘর।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই এলাকার ৪৬টি কাঁচা-পাকা বাড়ির ঘরের চালা সমান করে বালি ফেলা হয়েছে। বালিতে তলিয়ে গেছে টিউবওয়েল, বাথরুম, রান্নাঘরসহ সবকিছু।

ওই এলাকার জনপ্রতিনিধি বলেন, বালি ভরাট করতে আসলে তারা বলে পুকুরের লেভেল অনুযায়ী বালি ভরাট করবে। কিন্তু পরে বালির উচ্চতা অনেক বৃদ্ধি পেলে তাদের নিষেধ করা হয়। কিন্তু তারা আমাদের জানায়, পাকা বাড়ির সামনে দিয়ে বাধ তৈরি করে বালি ফেলবো, যাতে কোনো সমস্যা না হয়। কিন্তু রাতের অন্ধকারে প্রতিটি বাড়ির চাল সমান করে বালি ফেলা হয়। অন্ধকার রাতে ঘর থেকে কোনভাবে দৌঁড়ে পালিয়ে বাঁচেন ক্ষতিগ্রস্তরা।

এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার নির্বাহী প্রকৌশলী (ড্রেজিং শাখা) তাজমির হোসেন বলেন, আমরা নির্দেশ দিয়েছিলাম পুকুর ভরাট করতে। আপনাদের কাছ থেকে জানতে পারলাম যে বসতবাড়ির চালা পর্যন্ত বালি ভরাট করা হয়েছে। আমি স্বীকার করছি এটা অন্যায় ও অপরাধ।

অফিস খুললেই এর সাথে জড়িত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান এই প্রকৌশলী। তবে এ ব্যাপারে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কেউ কথা বলতে রাজি হোননি।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো খবর...
এক ক্লিকে বিভাগের খবর