বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:১৭ অপরাহ্ন

কুমারখালীতে নব নির্মিত রাস্তার কাজ শেষে না হতেই ভেঙ্গে পড়ছে দুইপাড়

কুষ্টিয়ার সময় প্রতিবেদক / ৩৫১ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম: রবিবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৭:০১ অপরাহ্ন

সম্প্রতি নন্দলালপুর ইউনিয়ন পরিষদে ২০২০-২০২১ অর্থ বছরের এলজিএসপি-৩ বরাদ্দ বিবিজি ২য় পিবিজি অনুদানের বেশ কয়েক লক্ষ টাকার কাজ পায় নন্দলালপুর ইউনিয়ন পরিষদ। চড়াইকোল হাচেন সর্দারের বাড়ি থেকে আজাহারের বাড়ির অভিমূখী রাস্তার ফ্লাট সলিং করনসহ বেশ কয়েকটি রাস্তার কাজ ইতি মধ্যেই শেষ হয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, নন্দলালপুর ইউনিয়ন পরিষদের উত্তর ও দক্ষিন পাশে দুপাশেই রয়েছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেচ খাল। আর এই খাল ঘেসেই দুইটা রাস্তার সলিং করন সহ নানা উন্নয় কাজ করা হয়েছে। তবে প্রতি বছরই পানিতে এসকল রাস্তা ধসে যায়। বর্ষা মৌসুম ছাড়াও বৃষ্টি হলে অনেক সময় বড়ুলিয়া সুইজ খাল বন্ধ করে দিলে দুইটা রাস্তাতে পানি উঠে পড়ে এবং রাস্তার বিভিন্ন স্থান ধসে যায়। আর এসকল রাস্তার আগে পাইলিং না করে এমন রাস্তার হুটহাট নির্মান করায় প্রায় অর্ধশত স্থানে ভাঙ্গন সৃষ্টি হয়েছে ইতি মধ্যেই। অনেকই জায়গার ইট ধসে খালে চলে গেছে, অনেক খানের নরভরে হয়ে যাওয়ার রাস্তার ইট তুলে ব্যবহার করছে স্থানীয়রা ।

সাধারন জনগন বলছে কিছু কিছু স্থানে পাইলিং করলেও তা নাম মাত্র। এসকল পাইলিং কোন কাজেই আসেনি। আর তাই এমন অরিকল্পিত ভাবে রাস্তা নির্মানের ফলে নষ্ট হলো সরকারি অর্থ। আর তাই রাস্তা নির্মানের আগে পাইলিং ব্যবস্থাটা জরুরী ছিলো।তবে সাম্প্রতিক ভাঙ্গনের পর রাস্তার কিছুটা মেরামত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এই মেরামত দীর্ঘস্থায়ী হবেনা বলেও জানান স্থানীয়রা।

অভিযোগ আছে সেসময় চেয়ারম্যান দুজন সদস্য নিয়ে সেই অর্থ দিয়ে প্রকল্প নির্বাচন, প্রকল্প প্রস্তাব, বিজিসিসি কমিটি প্রেরণ করে সদরপুর মিন্টুর বাড়ি থেকে লিংকনের বাড়ি মুখে সড়ক এইচবিবি করণ, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সাজ্জাদের বাড়ি থেকে সবদুলের বাড়ি মুখি সড়ক এইচবিবি করণ, ৯ নম্বর ওয়ার্ডের চড়াইকোল হাচেন সর্দ্দারের বাড়ি থেকে আজহারের বাড়ি মুখি সড়ক এইচবিবি করণ করেছেন। উক্ত কাজগুলো চলমান থাকা অবস্থায় নিম্নমানের ইট ব্যবহার করার কারনে প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা (ডিএফ) এসে বন্ধ করে দেন। কিন্তু রাতের অন্ধকারে এবং শুক্রবার ও শনিবার অফিস বন্ধ থাকার সুযোগ নিয়ে ওই সড়কগুলোর কাজ চেয়ারম্যান ও ওই দুজন সদস্য একেবারে নিম্নমানের ৩ নম্বর ইট দিয়ে ও নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে শেষ করেছেন।
অভিযোগ আছে রাস্তাটি ৮ ফিট করার কথা থাকলেও ৭ ফিট রাস্তা করেছেন বেশ কিছু স্থানে। বাকি ১ ফিট রাস্তা লেন্থ বাড়িয়েছেন কিন্তু সে পরিমানে বাড়ার কথা সেখানে সে পরিমান না বাড়িয়ে সুকৌশলে রাস্তার শেষে মাত্র ৫০ ফিট বাড়িয়েছেন নিজেকে সৎ প্রমান করতে।

এছাড়াও জানা যায় চলতি বছরে কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও সাবেক সচিবের বিরুদ্ধে দূর্ণীতি, স্বেচ্ছাচারিতা ও অনিয়মতান্ত্রিকভাবে ইউনিয়ন পরিষদ পরিচালনার অভিযোগ এনে ইউএনও, জেলা প্রশাসক, বিভাগীয় কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগও দিয়েছিলেন একই ইউনিয়ন পরিষদের ১০ জন সদস্য।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, রাস্তা নির্মানের সময় খুবই দুর্বল ইটের ব্যবহার হয়েছে আর নির্মান সামগ্রীয় ছিলো নিন্মমানের । সেইসাথে পাইলিং ব্যবস্থা না থাকাই রাস্তাটি হয়নি টেকশোই। অনেই বলছেন এতো নিন্মমানের ইট দিয়ে আমাদের এতোদিনের স্বপ্নের রাস্তা করা হবে তা কখনও ভাবতেও পারিনি। এর আগে সরকারী ত্রান বিতরণ নিয়ে নন্দলালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের উপর ক্ষিপ্ত হয় স্থানীয় ভ্যান চালকরা। এক পর্যায়ে অনিয়মের অভিযোগ এনে তার মটর সাইকেলের চাবিও কেড়ে নেওয়ার ঘটনা ঘটেছিলো। তার আগে খালের মাছ বিক্রি নিয়েও তৈরি হয়ে ছিলো নানা অনিয়মের গুঞ্জন।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য একাধিকবার নন্দলালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নওশের আলী বিশ্বাসের মুঠোফোনে কল করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি ফোনে।

কুমারখালী উপজেলা এলজিডি কর্মকর্তা জানান, এবিষয়ে আমার তেমন জানা নেই। এজিএসপির কাজ জেলা থেকে হয়। আর এটার তদন্ত জেলা থেকে করা হয়ে থাকে।

এ ব্যাপারে কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মন্ডল বলেন, এবিষয়ে আমি লিখিত কোন অভিযোগ এখনও পাইনি। বিষয়টি আমি আপনার মাধ্যমে শুনলাম, দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো খবর...
এক ক্লিকে বিভাগের খবর