কিছুতেই বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটির। শুরু থেকেই নানা বিতর্ক জন্ম দিয়ে আসছে কুষ্টিয়ার গুরুত্বপূর্ণ এ উপজেলার ছাত্রলীগের কমিটি। অছাত্র, মাদক ব্যবসায়ী, বয়স জটিলতা, পকেট কমিটিসহ নানাভাবে বিতর্কিত হয়েছে।
রাইসুল-রাসেলের সফল কমিটির পর আর কোনো গ্রহণযোগ্য ও বিতর্কহীন কমিটি দিতে পারেনি জেলা ছাত্রলীগ এমনই অভিযোগ করেছেন নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ছাত্রলীগের ত্যাগী নেতারা।
গেল বুধবার ২৩ শে ফেব্রুয়ারি কুমারখালী উপজেলা ছাত্রলীগের ৪৮ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করেছে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগ। বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কুষ্টিয়া জেলা শাখার প্যাডে ছাত্রলীগের জেলা শাখার সভাপতি মো. আতিকুর রহমান অনিক ও সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ চ্যালেঞ্জ এই কমিটির অনুমোদন দেন।
বুধবার ঘোষিত কমিটিতে কুমারখালী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জীবন হাসান সোহেলকে সভাপতি ও নতুন মুখ রাশেদ আলমকে সাধারণ সম্পাদক করে ৪৮ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি প্রকাশ করা হয়েছে।
তবে অনুসন্ধানে দেখা গেছে, নব-নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক রাশেদ আলমের বিরুদ্ধে বয়স জালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে।
রাশেদ আলমের বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত ঘেটে দেখা যায় সেখানে তার জন্মতারিখ ১৬ অক্টোম্বর ১৯৯১ সাল(জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর- ৮২******২৩৭)। সেই হিসাবে তার বয়স ৩০ বছর ৪ মাস ৮ দিন।
গত ২৮তম সম্মেলনে ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্বাচনের জন্য দুই বছর বাড়িয়ে বয়সসীমা ২৯ বছর করে দেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনার আদেশ অমান্য করে নিয়ম বর্হিঃভূতভাবে ৩০ বছর ৪ মাস ৮ দিন বয়সে কী করে উপজেলা সাধারণ সম্পাদকের পদ পায়- এমন প্রশ্নে সমালোচনা চলছে রাজনৈতিক অঙ্গনে।
ছাত্রলীগের ত্যাগী নেতারা বলছেন- এখন তথ্য-প্রযুক্তির যুগে বয়স লুকিয়ে কিভাবে সে উপজলো ছাত্রলীগের গুরুত্বপূর্ণ পদে আসলো তা বোধগম্য নয়। এই বিষয়ে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পদকের গাফিলতি আছে কিনা- তা খতিয়ে দেখতে হবে।
স্থানীয় নেতা-কর্মীরা জানান, রাশেদ আলম কখনো ছাত্রলীগের সাথে জড়িত ছিলনা, এমনি কোনো পদেও ছিলো তাহলে ত্যাগী কর্মীদের বাদ দিয়ে বয়স জালিয়াতি করে হঠ্যাৎ করে কিভাবে ছাত্রলীগের উপজেলা কমিটির গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে পেলো।
এদিকে উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটির সহসভাপতি ফোরহাদ হোসেন পাপ্পুও বিবাহিত অছাত্র ব্যবসায়ী বলে অভিযোগ রয়েছে। পাপ্পুর বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। পাপ্পুর বেপরোয়া জীবনযাপনের অতিষ্ট হয়ে পাপ্পুকে তার স্ত্রী গত ২০২০ সালের ১৫ জুনে তালাক দেন।
অপর দিকে নবগঠিত পৌর ছাত্রলীগের কমিটিতে স্থান পাওয়া ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন পলাশ কুমারখালী উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তাকে নিয়েও ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে। ইউনিয়নের বাসিন্দা হয়ে কি করে পৌর ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের পায়।
এসব অভিযোগের ব্যাপারে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য কুষ্টিয়ার সময়কে বলেন, আমরা এমন অভিযোগ পাইনি। এমনটি হয়ে থাকলে তদন্ত করে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।