ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ক্যাম্পাসে চুরি করতে এসে ১৫ বছরের এক কিশোর আটক হয়েছে। সে ক্যাম্পাস পার্শ্ববর্তী শেখপাড়া এলাকার চরপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
বৃহস্পতিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের রবীন্দ্র-নজরুল কলাভবনের পাশে রাখা নির্মাণসামগ্রী চুরি করতে এলে দায়িত্বরত আনসার সদস্যদের হাতে আটক হয় সে।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাকে ইবি থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও আনসার সদস্যরা জানান, রাতে একটি ভ্যানে করে ওই ভবনের পাশে থাকা কিছু নির্মাণসামগ্রী চুরি করতে আসলে দায়িত্বরত আনসার সদস্য তাকে দেখে ফেলেন। সে ভ্যানচালককে রেখে দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে তার পিছু নিয়ে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যান আনসার সদস্য।
সেখানে বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টরিয়াল বডি ও আনসার সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদে চুরির কথা স্বীকার করে ওই কিশোর। এছাড়াও কয়েকমাস আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হল থেকে সাবমার্সিবল পাম্প চুরি এবং কয়েকদিন আগে দুই ভ্যান টাইলস ও আট কার্টন ক্যাবল চুরিসহ বিভিন্ন সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্মাণসামগ্রী চুরির সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথাও স্বীকার করে সে।
এছাড়া সে চুরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট আরও বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে। এরমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের কর্মচারী তোজামের ভাগ্নে সাব্বির হোসেন, শৈলকুপার সাতগাছী এলাকার সাগর আলী, পদমদী গ্রামের জবার আলীর ছেলে তরিকুল, একই গ্রামের বাসিন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঝালমুড়ি বিক্রেতা জামাল রঞ্জু মিয়া, আকাশ ও সুমনের নাম বলে।
এদের মধ্যে সাগরের শৈলকুপায় ভাঙারির দোকান রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে চুরি করা মালামালগুলো সাগরের দোকানে বিক্রি করা হয় বলে জানায় কিশোর। এছাড়া চুরি করার জন্য তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের থানাগেট, লালন শাহ ও বঙ্গবন্ধু হলের পকেট গেট ব্যবহার করে বলে জানায় সে।
কিশোর জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম ঘাসকাটা এবং কাগজ কুড়ানোর নামে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। মূলত ক্যাম্পাসের বিভিন্ন মালামালের সন্ধান পেতেই হিমেলসহ অন্যরা ক্যাম্পাসে আসত। মামার চাকরির সুবাদে সাব্বিরও এগুলোর খোঁজখবর রাখত। দিনভর সন্ধান শেষে রাতের বেলা আনসারদের চোখ ফাঁকি দিয়ে ভ্যানভর্তি মালামাল নিয়ে ক্যাম্পাস ত্যাগ করে বলে জানায় সে।
স্বীকারোক্তিতে সে আরও জানায়, ২১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ রাসেল হলের চুরির ঘটনার সঙ্গেও সম্পৃক্ত সে। তার সঙ্গে আরও ৪-৫ জন ওই দিন চুরি করতে আসে।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, ‘এ ব্যাপারে ইবি থানার ওসির সঙ্গে কথা বলেছি। তার স্বীকারোক্তির পর চুরির সঙ্গে সম্পৃক্ত অন্যদের আসামি করে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানিয়েছেন তিনি। এসব ঘটনা রোধে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও জোরদার করা হবে।’