মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার আবু ওসমান চৌধুরী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।) আজ শনিবার সকাল ৮টার দিকে রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার ব্যক্তিগত সহকারী আবুল বাশার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৮৫ বছর।
আবু ওসমান চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধকালে ৮ নম্বর সেক্টরের কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। তিনি সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সহসভাপতি। দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক নানা অসুস্থতায় ভুগছিলেন এ বীর মুক্তিযোদ্ধা।
শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে গত ৩০শে আগস্ট দুপুরে তাকে ঢাকা সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে পরীক্ষা শেষে তার শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।
উল্লেখ্য, ১৯৩৬ সালের ১লা জানুয়ারি আবু ওসমান চৌধুরী চাঁদপুর জেলার ফরিদগঞ্জ থানার মদনেরগাঁও গ্রামের চৌধুরী পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে আবু ওসমান চৌধুরী পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন মেজর পদে কুষ্টিয়ায় কর্মরত ছিলেন। অপারেশন সার্চলাইট-এর খবর পেয়ে ২৬শে মার্চ সকালে বেলা ১১টায় তিনি চুয়াডাঙার ঘাঁটিতে পৌঁছে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন এবং মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন।
এর আগে ১৯৭১ সালের ৬ মার্চ আবু ওসমান চৌধুরী পদ্মা-মেঘনার ওপারে কুষ্টিয়া থেকে বরিশাল জেলা পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকাকে দক্ষিণ-পশ্চিম রণাঙ্গণ নামকরণ করে সে রণাঙ্গণের অধিনায়কত্ব গ্রহণ করেন।
পরে ১৯৭১ সালের ১০ এপ্রিল বাংলাদেশ সরকার তাকে দক্ষিণ পশ্চিমাংশের আঞ্চলিক কমান্ডার হিসেবে নিযুক্ত করেন। মে মাসের শেষার্ধে প্রধান সেনাপতি এম এ জি ওসমানী দক্ষিণ-পশ্চিম রণাঙ্গনকে দুই ভাগ করে ৮নং ও ৯নং সেক্টরদ্বয় গঠন করেন এবং ৮ নং সেক্টরের দায়িত্বে আবু ওসমানকে নিয়োগ করা হয়।
প্রাথমিকভাবে সে সময় ওই সেক্টরের অপারেশন এলাকা ছিল কুষ্টিয়া, যশোর, খুলনা, বরিশাল, ফরিদপুর ও পটুয়াখালী জেলা। মে মাসের শেষে অপারেশন এলাকা সংকুচিত করে কুষ্টিয়া ও যশোর, খুলনা জেলা সদর, সাতক্ষীরা মহকুমা এবং ফরিদপুরের উত্তরাংশ নিয়ে এলাকা পুনর্গঠন করা হয়। এই সেক্টরের প্রধান ছিলেন আবু ওসমান চৌধুরী এবং পরে মেজর এম এ মঞ্জুর।