দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-১ আসনে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি সাবেক সংসদ সদস্য (স্বতন্ত্র) রেজাউল হক চৌধুরী ফের দাঁড়িয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীতায়। ঘুরে ফিরে আলোচনায় আসছে ডামি বা বিদ্রোহী তকমার সাথে আয় ও সম্পদের হিসাব। নির্বাচনী এলাকায় রেজাউল হক চৌধুরীকে কেউ ভাবছেন দলীয় ডামি আবার কেউ ভাবছেন বিদ্রোহী। বিগত পাঁচ বছরে তাঁর আয় কমলেও সম্পদ বেড়েছে অস্বাভাবিক ভাবে।
২০১৩ সালে সাবেক এই সংসদ সদস্যের নিজ নামে থাকা ৫০ হাজার টাকা এক দশক পরেও আছে ৫০ হাজারেই। ১০ বছরে ব্যাংকে টাকা বেড়েছে নিজের ও স্ত্রীরসহ মাত্র ৯ লাখের মতো। তাঁর বৃদ্ধা স্ত্রী করেন কৃষি কাজ ও ব্যবসা। তিনি ও তাঁর স্ত্রী ৭ বিঘা জমি কিনেছেন বাজারমূল্য ৭০ হাজার টাকায় অর্থাৎ ১০ হাজার টাকা বিঘায়। ২০১৩ থেকে এপর্যন্ত পরিবারটি তাদের বার্ষিক আয় বৃদ্ধি করতে পেরেছে ১৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকা, কিন্তু এই আয়েই সম্পদ বেড়ে গেছে ৬ কোটি ৩ লাখ টাকার।
তবে বিভিন্ন জাতীয় নির্বাচনের হলফনামায় উল্লেখ করা রেজাউল হক চৌধুরীর নিজের ও তাঁর পরিবারের আয় ও সম্পদের হিসাব সঠিক নয়, নামমাত্র উপস্থাপন বলে জোর গুঞ্জন উঠেছে দৌলতপুরে। অভিযোগ তুলেছেন ভোটের মাঠে সক্রিয়রা।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২০১৪ সালে কুষ্টিয়া-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে এমপি নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল হক চৌধুরী। একাদশ সংসদে প্রার্থী হতে গিয়ে ২০১৮ সালে তিনি যে সম্পদের হিসেব দিয়েছিলেন তাতে বাৎসরিক আয় দেখানো হয়েছিল ২৮ লাখ ৮২ হাজার টাকা। এবার ২০২৩ সালে আবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে তিনি যে হলফনামা দিয়েছেন সেখানে স্ত্রী ও ছেলেদের আয়সহ তার বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছে ১৭ লাখ ৬০ হাজার টাকা। অভিযোগ উঠেছে রেজাউল হক চৌধুরী তাঁর নিজের ও পরিবারের অনেক সম্পদের হিসাব হলফনামায় দেননি, আড়াল করেছেন। এমনকি ২০১৮ সালে নিজের ও স্ত্রীর নামে যে ২ লাখ ৯৬ হাজার টাকার কৃষি জমির হিসেব দেয়া হয়েছিল তা ২০২৩ সালে এসে মাত্র ৭০ হাজার টাকায় দেখানো হয়।
এসব ব্যাপারে প্রতিবেদকের কথা বলা সম্ভব হয় রেজাউল হক চৌধুরীর ছেলে এমরান চৌধুরী কলিন্সের সঙ্গে। তিনি বলেন, আমাদের ঠিকাদারি ও ব্যবসা বেড়েছে। সম্পদ বাড়বেই। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীক প্রয়োজনে আমাদের কিছু কৃষিজমি বিক্রি করে দিতে হয়েছে। তবে, কি পরিমাণ জমি বিক্রি কার হয়েছে তা তাৎক্ষণিক বলতে পারেননি তিনি।
কুষ্টিয়া সচেতন নাগরিক কমিটির সভাপতি বীর মক্তিযোদ্ধা রফিকুল আলম টুকু বলেন- প্রার্থীদের সম্পদে তারতম্য দেখা যাচ্ছে তা অস্বাভাবিক। নিন্দনীয়।