অল্প দিনেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক গ্রুপ ’আমরা সবাই খোকসাবাসী’। দেশ-বিদেশে অবস্থানরত খোকসার মানুষের ভালোবাসার একটি ঠিকানায় পরিণত হয়েছে গ্রুপটি। পদ্মা-গড়াই বিধৌত খোকসা বরাবরই ছিল সাহিত্য-সংস্কৃতির তীর্থভূমি। খোকসার অনেকেই জাতীয় সংস্কৃতিতেও অবদান রেখেছেন।
সেই ধারাবাহিকতায় করোনাকালীন সময়ে মানুষের একঘেয়েমিতা কাটাতে ফেসবুক ভিত্তিক গ্রুপ আমরা সবাই খোকসাবাসী আয়োজন করে সংগীত প্রতিযোগিতার। এখানে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন গ্রুপের প্রতিটি সদস্য। তাছাড়াও বিশাল ফারাক এড়াতে মূল বিচারক হিসেবে ছিলেন ৫ জন। আর প্রতিযোগিতা জুড়ে ছিল পুরষ্কারের ছড়াছড়ি।
ব্যতিক্রমি এ প্রতিযোগিতাটিতে সর্বোচ্চ ৮৭ নম্বর পেয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন উর্মি মোস্তফা। প্রথম রানার আপ হয়েছেন নওশীন ফারিয়া অহনা (৮৩.৬৭) এবং দ্বিতীয় রানার আপ হয়েছেন মাসুদ রানা মিলন (৭৬.৩৯)
এর পরই আছেন রুহুল আমিন (৭৫.৩০), তনু শোভা আলম (৬৮.২৭), জারিন রিতু (৬৭.১৮), কিরন আহসান (৬৭.১৫), জয়া অনন্যা (৬৫.৩২), স্বর্ণালী আহমেদ (৬৫.০৫) এবং রাসেল আহমেদ মিলন (৬৩.৭৬)। মোট ২৬ জন প্রতিযোগী এতে অংশ নেন।
পুরষ্কার হিসেবে প্রথম বিজয়ী পাচ্ছেন নগদ ১৫০০ টাকা, দ্বিতীয় বিজয়ী পাচ্ছেন নগদ ১০০০ টাকা, তৃতীয় বিজয়ী পাচ্ছেন নগদ ৭০০ টাকা। এ ছাড়াও চতুর্থ বিজয়ী পাচ্ছেন নগদ ৫০০ টাকা, পঞ্চম বিজয়ী নগদ ৪০০ টাকাসহ ষষ্ঠ থেকে দশম বিজয়ী পাচ্ছেন নগদ ৩০০ টাকা করে। আর প্রতিযোগিতায় প্রতি অংশগ্রহণকারীরা পাচ্ছেন ১০০ টাকা মোবাইল রিচার্জ।
এছাড়াও ব্যক্তিগতভাবে সাবেক এমপি প্রকৌশলী শহীদুল্লাহপত্নী ফরিদা মনি শহীদুল্লাহ ব্যক্তিগতভাবে চ্যাম্পিয়ন, রানার আপ দুজনের জন্য অতিরিক্ত ৫০০ টাকা পুরষ্কার দিবেন।
আয়োজক কমিটি ছাড়াও পুরষ্কার প্রদানে ভূমিকা রেখেছেন- বিশিষ্ট সমাজসেবক, সংগীত ও ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব অ্যাডভোকেট আকরাম হোসেন দুলাল, জনতা ব্যাংকের এজিএম আব্দুর রাজ্জাক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শাহাবুদ্দিন সম্রাট।
এছাড়াও খোকসার গুণী শিল্পীকে সম্মাননাসূচক পুরষ্কারে ভূষিত করেছেন খোকসা উপজেলা কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের জিএম সিরাজুল ইসলাম। পাশাপাশি দুজন মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেক ও আলতাফ হোসেনকে মিঠুন নামে এক প্রবাসী সম্মাননা দিয়েছেন।
আয়োজক ও বিচারক রবিউল আলম বাবুল কুষ্টিয়ার সময়কে বলেন, করোনাকালীন সময়ে ঘরে বসেই অনেকেই বিরক্ত। জনজীবনে স্বাভাবিকতা ফিরলেও মানসিকতায় এখনো রয়েছে কিছুটা বিরক্তি। আর এই বিরক্তিময় সময়টিকে রঙিন ও প্রাণবন্ত করে তুলতে ফেসবুক ভিত্তিক গ্রুপ ’আমরা সবাই খোকসাবাসী’ আয়োজন করে ভার্চুয়ালি সংগীত প্রতিযোগিতা।
বিচারক সিরাজুল ইসলাম বলেন, যেহেতু রিএক্টে মার্ক ছিল। সেটি আমরা যে সবচেয়ে বেশি রিএক্ট পেয়েছে তার প্রাপ্ত রিএক্ট ১৬৫ কে ৫০ ধরে বাদবাকিগুলোকে গড় হিসাব করে নম্বর দিয়েছি।
প্রতিযোগিতাটির বিচারক আহসান নবাব কুষ্টিয়ার সময়কে বলেন, প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে শুধু খোকসার বাসিন্দা। তবে বৈবাহিক সূত্রও কাউন্ট করা হয়েছে। বিজয়ী নির্ধারণ করা হয়েছে বিচারক ও পোস্টের রিএক্ট (লাইক বা অন্যান্য রিএক্ট) এর উপর। প্রতিযোগিতায় বিচারক ছিলেন গ্রুপের ৫ জন সদস্য। প্রত্যোক বিচারকের হাতে ১০ করে মোট ৫০ মার্ক। আর বাকি ৫০ মার্ক নির্ধারণ হয়েছে পোস্টের লাইক বা অন্যান্য রিএক্টের উপর।
তিনি আরও বলেন, এর ফলে হয়তো জাজমেন্টটা কিছুটা হেরফের হয়েছে। তবে যেহেতু এটি একটি কম্পিটিশনের রুলস ছিল। তাতে বিষয়টি মেনে নিতেই হবে। কারণ আমরা চেয়েছিলাম- গ্রুপের সব সদস্যই বিচারকের ভূমিকা পালন করবে। এখানে যার কমিউনিটি বা পরিচিতি যত বেশি সে ততটা এগিয়ে গেছে।
পুরো প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন- মো. সিরাজুল ইসলাম, মো. রবিউল আলম বাবুল, আহসান নবাব, অরণ্য রেজা ও অ্যাডভোকেট সুরাইয়া নাসরীন
গ্রুপের অ্যাডমিন অরণ্য রেজা বলেন, এর পর বিষয়ভিত্তিক নানা প্রতিযোগিতা চলতেই থাকবে। তবে সবার সহযোগিতা প্রয়োজন। আর পরবর্তী আয়োজনে গ্রুপ মেম্বারদের মার্ক কিছুটা কমিয়ে আনা হবে।