কুষ্টিয়ার দৌলতপুর কলেজে অনার্স শাখায় নিয়োগ পাওয়া ৮ জন শিক্ষকের কাছ থেকে ২ কোটি টাকার অর্থ বাণিজ্য করে অবৈধ পন্থায় তাদের বেতন ছাড় করাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন পলাতক অধ্যক্ষ ছাদিকুজ্জামান খান সুমন। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দৌলতপুর কলেজের শিক্ষক সহ সর্বস্তরের মহলে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। একইসাথে অর্থ বাণিজ্যের সাথে জড়িত দৌলতপুর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও ক্ষমতার দাপটে দৌলতপুর কলেজে অবৈধভাবে নিয়োগ নেওয়া পলাতক থাকা অধ্যক্ষ মো. ছাদিকুজ্জামান খান সুমনের বিরুদ্ধে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন কলেজের শিক্ষক মহল।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানাগেছে, দৌলতপুর কলেজের অধ্যক্ষ মো. ছাদিকুজ্জামান খান সুমন অনার্স শাখায় বিভিন্ন বিষয়ে নিয়োগ পাওয়া ১১জন শিক্ষকের কাছ জনপ্রতি ২০ থেকে ২৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদের প্যাটার্ন বর্হিভূত ও অবৈধভাবে বেতন ছাড় করিয়েছেন। শিক্ষা দপ্তরের অসাধু কর্মকর্তাদের যোগসাজসে এবং দৌলতপুর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়ার সুবাদে অধ্যক্ষ সুমন অবৈধভাবে ১১জন অনার্স শাখার শিক্ষকের বেতন করানোর পর এবার একইভাবে আরো ৮জন অনার্স শাখার শিক্ষকদের বেতন করাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
দৌলতপুর কলেজের বাংলা, ইংরেজি, অর্থনীতি, ইতিহাস, ইসলামের ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ব্যবস্থাপনা সহ বিভিন্ন বিষয়ে অনার্স (সম্মান) শাখায় প্রভাষক পদে নিয়োগ পাওয়া মো. রবিউল ইসলাম, আয়েশা খাতুন, মো. রঞ্জু আহমেদ, মো. গোলাম মোর্শেদ, মোসা মুনিরা নাসরিন, মোছা. রাবেয়া খাতুন, কামরুন নাহান ও মোছা. হালিমা খাতুনের কাছ থেকে বেতন করানোর শর্তে ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন অধ্যক্ষ ছাদিকুজ্জামান খান সুমন এমন অভিযোগও রয়েছে এবং বিষয়টি কলেজ সংশ্লিষ্ট সকলে অবগতও রয়েছেন।
সংশ্লিষ্ট ও ভূক্তভোগীদের দাবি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশের সরকার পরিবর্তন হলেও দৌলতপুর কলেজের অধ্যক্ষ সুমন পলাতক থেকেও বৈষম্যমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছেন বহাল তবিয়তে। তাই তদন্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে দ্রæত আইনগত ব্যবস্থা ও অবৈধভাবে ছাড় করা শিক্ষকদের বেতন বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।
এবিষয়ে জানতে চাইলে দৌলতপুর কলেজের ভূগোল বিভাগের প্রদর্শক মো. জহুরুল আলম জানান, বিগত সরকারের সময় দৌলতপুর কলেজের অধ্যক্ষ ও দৌলতপুর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ছাদিকুজ্জামান খান সুমন অনার্স শাখায় বিভিন্ন বিষয়ে নিয়োগ পাওয়া ১১জন শিক্ষকের কাছ মোটা অংকের অর্র্থ বাণিজ্য করে তাদের প্যাটার্ন বর্হিভূত ও অবৈধভাবে বেতন ছাড় করিয়েছেন। একইভাবে বর্তমান সরকারের সময়েও আরো ৮জন অনার্স শাখার শিক্ষকদের বেতন করাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। এরসাথে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অসাধু কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা জড়িত রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে দৌলতপুর কলেজের অধ্যক্ষ মো. ছাদিকুজ্জামান খান সুমনের কাছে ফোন দিলে তাঁর মোবাইলফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে এবিষয়ে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আব্দুস সালাম বলেন, আমি তেমন কিছু জানিনা। ফেসবুকের মাধ্যমে আমিও জানতে পেরেছি। এর সত্যতা পেলে ও কাগজপত্র যাচাই করে অবশ্যই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এবিষয়ে দৌলতপুর কলেজের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি আলহাজ আলতাব হোসেন বলেন, বিষয়টি নিয়ে কলেজের গভর্নিং কমিটির আগামী মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত হবে এবং তদন্ত করে বিধিমোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
You must be logged in to post a comment.