রাজনৈতিক দাপটে একের পর এক মানুষকে হয়রানি আর নি:স্ব করেও নিজেকে সংখ্যালঘু বলে দাবি করেন কুষ্টিয়ার খোকসার নামকরা সুদ ব্যবসায়ী নারায়ণ চক্রবর্তী। এবার মালিকানা জমি দখলের পায়তারায় নেমেছে নারায়ণ চক্রবর্তী ওরফে সুদে নারায়ণ।
গেল বছর জনপ্রিয় বেসরকারি স্যাটেলাইট টেলিভিশন যমুনা টিভিতে সুদ ব্যবসায়ী হিসেবে শিরোনাম হয়েছিলেন সুদে নারায়ণ। কুষ্টিয়ায় সুদের উপর টাকা দেয়ার কথা বলে সাধারন মানুষদের ফাঁদে ফেলছে একটি চক্র! কিন্তু কিভাবে এবং কারা কারা জড়িত এই চক্রের সাথে? চ্যানেলটির একটি অনুসন্ধানী টিম ’মহাজনের চেকের ফাঁদ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রচার করে। যেখানে উঠে আসে নারায়ণ গংদের লোমহর্ষক কাহিনি। কিন্তু তারপরও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। এ নিয়ে স্থানীয়দের ক্ষোভের শেষ নেই।
জানা গেছে, বাংলাদেশ রেলওয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার আনিসুর রহমান রাজশাহীতে থাকলেও মাঝে মাঝেই নাড়ির টানে চলে আসেন কুষ্টিয়ার খোকসার গোপগ্রামে। সেখানে তার পৈত্রিক নিবাস। বাজারে কিনেছেন কিছু জমিও। কিন্তু তার বাজারের জমির উপর নজর পড়ে সুদখোর নারায়ণের। বাজারের পৌনে নয় শতক জমিতে দীর্ঘদিন ১৩ টি দোকান করে ভাড়া দিয়ে আসছিলেন তিনি। কিন্তু সেই জমির মালিকানা নিজের দাবি করে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে বন্ধ করে দেয় জমির উপর দোকানগুলোর সংস্কারের নির্মাণকাজ।
অথচ নারায়ণের দাবি করা জমিটি ১৯৯৩ সালে নারায়ণের কাকা অনিমেষ চক্রবর্তীর কাছ থেকে কিনেন আনিসুর রহমান। যার রেজিস্ট্রীসহ সকল বৈধ কাগজপত্র আছে তার কাছে। জমি কেনার পরের বছরের ১৯৯৪ সালেই সেখানে ১৩টি দোকান ঘর নির্মাণ করেন তিনি। যা এখনও রয়েছে।
সম্প্রতি করোনা মহামারির প্রভাবে দোকানে সংস্কারের প্রয়োজনে ভাড়াটিয়াদের সুবিধার্থে সেটা মেরামতের কাজ শুরু করা হয়। বৃ্স্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) ক্ষমতাশীন দলের নেতা নারায়ণ চক্রবর্তী সেই সংস্কার কাজে সন্ত্রাসী বাহিনি নিয়ে বাধা দেয় নারায়ণ। এর আগে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে জমিটি দখলে নেয়ারও চেষ্টা করে কুখ্যাত নারায়ণ।
এলাকাবাসীর চাপে কাজ বন্ধ না করতে পেরে পুলিশকে ব্যবহার করে সুচতুর নারায়ণ। বৃহস্পতিবার (১০ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিতে ভবানীগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ির কিছু পুলিশ দিয়ে সে সংস্কারের কাজ বন্ধ করে।
পরে খোকসা থানার নতুন অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম মোস্তফার হস্তক্ষেপে আবারো শুরু হয় সংস্কার কাজ। তারপরও বন্ধ করে দেয়া হয়েছে সংস্কার কাজ। উল্টো জমির আসল মালিককেই হেয় করা হচ্ছে।
এ ব্যাপারে খোকসা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেন, ব্যাপারটি পুলিশ গুরুত্ব সহকারে দেখছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে নারায়ণ চক্রবর্তীর ব্যাপারে। তার কিছু অনৈতিক কর্মকাণ্ডও আমরা জানতে পেরেছি। দুইপক্ষের সম্মতিতে আপাতত সংস্কার কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে। জমির মাপজোক করে তারপর কাজ শুরু করা হবে।
সুদ ব্যবসার ব্যাপারে তাকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি নতুন এসেছি। এরকম কিছু করলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
নারায়ণের সুদ ব্যবসার সম্পর্কে আরও জানতে ভিডিওটি দেখুন-