বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৩:১৯ পূর্বাহ্ন

সদর খানের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কাছে বাবুল আখতারের অভিযোগ

আকরাম হোসেন / ৫৬২৫ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম: রবিবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০, ৭:৪০ পূর্বাহ্ন

কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের দু’বারের সভাপতি সদর উদ্দিন খানের বিরুদ্ধে গুম, হত্যাসহ নানা অভিযোগ এনে দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন খোকসা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল আখতার ও যুগ্ম সম্পাদক আল-মাসুম মুর্শেদ শান্ত। ‘৭৫ পরবর্তী সময়ে সদর খান গরু জবাই করে উৎসব করার মত গুরতর অভিযোগও এনেছেন তারা। শনিবার (৬ সেপ্টেম্বর) শনিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী বরাবর এ চিঠি পাঠানো হয়।

পাঠকদের সুবিধার জন্য উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পাঠানো সেই চিঠির অভিযোগ তুলে ধরা হলো- স্বাধীনতা-উত্তরকালে সদর উদ্দিন খান জাসদ গণবাহিনীতে যোগ দেন। তিনি সংখ্যালঘুদের সম্পত্তি দখল করেছেন। এ ছাড়া স্বাধীনতা-উত্তরকালে সদর উদ্দিন খান খোকসা উপজেলার চর বিহারিয়া গ্রামের পূর্ণ বিশ্বাসের ছেলে প্রতাব বিশ্বাসকে অপহরণ করে ২ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করেন।

চিঠিতে বলা হয়েছে, জিয়াউর রহমান বিএনপি গঠন করলে সদর উদ্দিন খান ওই দলে যোগ দেন। তিনি উপজেলার শোমসপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। সে সময় সদর উদ্দিন খানের নেতৃত্বে তার ক্যাডার বাহিনী শোমসপুরসহ খোকসার বিভিন্ন ইউনিয়নের মানুষ বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার চালায়। ওই বাহিনীর চাঁদাবাজি ও ডাকাতির ঘটনায় অতিষ্ঠ হয়ে অসংখ্য হিন্দু পরিবার দেশ ত্যাগে বাধ্য হয়।

হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ রাষ্ট্র ক্ষমতায় এলে সদর উদ্দিন খান বিএনপি ছেড়ে জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। সে সময় তার নেতৃত্বে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর নির্মম অত্যাচার চলে। আওয়ামী লীগের সভায় হামলা, কার্যালয় ভাংচুরসহ নেতাকর্মীদের মারধরের ঘটনা ঘটে।

চিঠিতে আরও অভিযোগ করা হয়, পুলিশের বিশেষ শাখার তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী সদর উদ্দিন খান ১৯৯০ সালে আওয়ামী লীগে যোগ দেন। ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহী হয়ে পরাজিত হন। এরপর নানা কৌশলে তিনি কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন। এ পদ পাওয়ার পর তিনি আরও বেপরোয়া ওঠেন। সভাপতি হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে যাওয়া অনেক আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীকে গুম করে দিয়েছেন। এর মধ্যে খোকসা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক মহাব্বত হোসেন দুলাল, শ্রমবিষয়ক সম্পাদক মাজেদ, সদস্য নুরুল ইসলাম রয়েছেন। এ ছাড়া সদর উদ্দিন খানের ছোট ভাই রহিম উদ্দিন খান, ভাতিজা রবিন খান ও ইমরান খান এলাকায় মাদক ব্যবসা, রেললাইনের পাত চুরি, ভূমি দখলসহ নানা অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।

খোকসা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল আখতার বলেন, ‘আমরা যে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি তা শতভাগ সত্য। এখানে কোনো মিথ্যা অভিযোগ নেই। এলাকার মুরুব্বিদের সঙ্গে কথা বললেই সব সত্য বেরিয়ে আসবে।’

কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি সদর উদ্দিন খান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি বঙ্গবন্ধুর সৈনিক শেখ হাসিনার সৈনিক। আমি খোকসা উপজেলা ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছি। আমার বিরুদ্ধে এমন হাস্যকর অভিযোগ করে লাভ হবে না।’ তিনি বলেন, খোকসা উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি বাবুল আখতারের বিরুদ্ধে শিগগিরই দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আনা হবে।

উল্লেখ্য, সদর উদ্দিন খান পরপর দু’বার জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি টানা খোকসা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির পদে ছিলেন। টানা তিনবার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান। বাবুল আখতার দীর্ঘ সময় সদর খানের কমিটির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। সর্বশেষ সংসদ নির্বাচনের আগে নানা কারণে বিরোধ তৈরি হয় দু’জনের মধ্যে।


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো খবর...
এক ক্লিকে বিভাগের খবর