ক্রমেই সংস্কৃতির ঐতিহ্যশূন্য হচ্ছে কুষ্টিয়ার খোকসার। এরই ধারাবাহিকতায় বন্ধ হচ্ছে আরেকটি সিনেমা হল। যদিও এই অপর্ণা সিনেমা হলটি বন্ধ হয়ে গেছে সাত-আট মাস আগেই। এবার বন্ধ থাকা সিনেমা হলটি ভেঙে গোডাউন তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর আগে খোকসার সুবর্ণা সিনেমা হলের অবকাঠামো ভেঙে একটি অংশকে গোডাউনে পরিণত করা হয়।
হলটির মালিক আমজাদ হোসেন খোকন জানান, সুবর্ণা ও অপর্ণা সিনেমা হলের মালিক তিনি। সুবর্ণা সিনেমা হলটি ১০ বছর আগেই বন্ধ হয়ে গেছে। পরে সেটি ভেঙে একটি অংশে গোডাউন করা হয়েছে। বহুতল ভবনটির বাকি অংশ পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
আশির দশকে খোকসা উপজেলা সদরের পাটের গোডাউন ভেঙে তৈরি হয় প্রথম সিনেমা হল। এরপর অল্প সময়ের মধ্যে এক কিলোমিটারের মধ্যে তিনটি পেক্ষাগৃহের জন্ম হয়। প্রায় দুই যুগ ধরে চুটিয়ে ব্যবসা করেন হল মালিকরা। এরপর আকাশ সংস্কৃতির আগ্রাসনের পাশাপাশি ছবির সঙ্গে অশ্লীল কাটপিস সংযোজনের কারণে দর্শকরা হল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে শুরু করেন। এতে ক্রমাগত লোকসানের মুখে পড়ে সিনেমার প্রদর্শনী বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন হল মালিকরা।
খোকন জানান, সাত-আট মাস ধরে অপর্ণা সিনেমা হলটিও বন্ধ রয়েছে। এতে তিনি আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন। ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে হলটির অবকাঠামো ভেঙে একটি অংশকে গোডাউনে রূপান্তর করার উদ্যোগ নিয়েছেন। আর ভবনের বাকি অংশ কোনো ব্যাংকের কাছে ভাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
আমজাদ হোসেন সিনেমা হল বন্ধের পেছনে একদিকে প্রযুক্তির অপব্যবহার, অন্যদিকে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, পরিকল্পিতভাবে চলচ্চিত্র শিল্পকে ধ্বংস করা হয়েছে। সিনেমার সঙ্গে অশ্লীল কাটপিস সংযোজন করে মানুষকে সিনেমা হল বিমুখ করে তোলা হয়েছে।
বর্তমান সরকার প্রণোদনার মাধ্যমে সিনেমা ব্যবসার সুদিন ফেরাতে চায়। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রণোদনার ঋণের সুদ ৪ শতাংশ বলা হলে প্রকৃতপক্ষে ৯ শতাংশে গিয়ে দাঁড়াবে। ফলে ব্যবসায়ীরা আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না।
সুবর্ণা ও অপর্ণা ছাড়াও খোকসায় আশির দশকে নির্মিত মনামী সিনেমা হলটিও কার্যত বন্ধ রয়েছে। আগে ঈদ-পূজার উৎসবে দর্শক হলেও এখর আর কেউ হলে সিনেমা দেখতে আসে না।