ভাগিরথি-গঙ্গা-পদ্মার অববাহিকায় প্রায় আড়াইশো বছরের ইতিহাস কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের চারটি ইউনিয়নের চরাঞ্চলের। ২০২১ -এ এই এলাকা প্রথমবার আলোকিত হয় বিদ্যুতে, তারপর ২০২৪ এ শতবছরের যোগাযোগ ইতিহাস মাড়িয়ে এলাকাটিতে শুরু হয়েছে ইটের রাস্তার কাজ।
যদিও ইতিহাসের স্বল্পকালীন সময়ে ওই ঠিকানা গুলোতে ইটের রাস্তা এবং বিদ্যুৎ সংযোগও ছিলো, ছিলো দালান-কোঠার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও। প্রমত্ত পদ্মা, পদ্মা পাড়ের মানুষের সাথে এমন নির্মমতা দেখায় যে, কয়েক বছরে বিলীন হয়ে যায় স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আশির দশক পর্যন্ত গড়ে ওঠা ওই অঞ্চলের আধুনিক সকল স্থাপনা, ঘরবাড়ি সহ ভূসম্পত্তি। জলের নীচে সব রেখে নি:স্ব মানুষ হয়ে পড়ে বিপন্ন। কৃষি অর্থনীতিকে উপজীব্য করে ফের ঘুরে দাঁড়ায় এ অঞ্চলে নদী ভাঙনের পরেও টিকে থাকা মানুষেরা।
সম্প্রতি ৩ কিলোমিটার রাস্তার মাধ্যমে, ওই অঞ্চলে আগে থেকে করে রাখা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন ও সংস্কার প্রকল্পের আওতার মাটির রাস্তায় ১০ ফুট চওড়া ইটের রাস্তা তৈরি শুরু হয়েছে। রামাকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের ভাগজোত মোড় থেকে সৌদি পাড়া পর্যন্ত প্রথম দফায় এই রাস্তাটির কাজ শেষ হবে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব রেজাউল হক চৌধুরীর বিশেষ সুত্রে জানা গেছে চরাঞ্চলের সকল মূল রাস্তা ইটের তৈরি করা হবে। দুর্গম এসব এলাকার মানুষের যোগাযোগের দুর্দশা কাটাতে আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন রেজাউল হক চৌধুরী এমপি।
তবে, তৈরি করা নতুন ইটের সড়ক যেন টেকসই হয় এমন দাবি এলাকাবাসীর। রাস্তার বিভিন্ন জায়গায় দু’পাশে সড়ক রক্ষায় সাপোর্টিং বাঁধ নির্মাণ, কিছু জায়গায় ছোট-ছোট ব্রিজের পাশাপাশি চরাঞ্চলের রাস্তায় বেলে মাটি ও নতুন মাটি হওয়ায় ভালো করে বসিয়ে তারপর ইটের গাঁথুনি দিতে অনুরোধ স্থানীয়দের। সরেজমিনে দেখা যায় নির্মাণ কাজ চলছে নিয়মিত।
দায়িত্বশীল কর্মকর্তা উপ-প্রকৌশলী নাজমুল হোসেন জানান, বর্তমান সংসদ সদস্যের উদ্যোগে রাস্তাটিতে ইটের কাজ করা হচ্ছে। রেজাউল হক চৌধুরী এমপি দায়িত্ব নেয়ার পরই কাজটি অনুমোদন পায়। বরাদ্দ অনুসারে যতটা সম্ভব সফল করা হবে প্রকল্পটি।
এর মাধ্যমে এ অঞ্চলে শতবর্ষী যোগাযোগ ইতিহাস পরিবর্তনের সূচনা হলো বলে মত চরাঞ্চলের মানুষের।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ইউটিএমআইডিপি প্রকল্পের আওতায় রামকৃষ্ণপুর ও চিলমারী ইউনিয়নে প্রকল্পটির কাজ চলমান থাকবে।
উল্লেখ্য, দৌলতপুর উপজেলার এই দীর্ঘ পথ ধরে দুর্গম চরাঞ্চলের অন্তত পঞ্চাশ হাজার মানুষের চলাচল।