পেশায় একজন চিকিৎসক হলেও নিয়মিত লেখালেখির কারনে দেশ-বিদেশের পাঠকদের মন জয় করে নানা সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন ডা.তানিয়া রহমান তনি।
ইন্টারন্যাশনাল এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড (মহাবঙ্গ সাহিত্য পরিষদ, কলকাতা),প্যারীচাঁদ মিত্র সাহিত্য পুরস্কার ( কলকাতা),ইন্টারন্যাশনাল মহাবঙ্গ লিটারেচার ফেস্টিভ্যাল অ্যাওয়ার্ড (কলকাতা),জাগো দুর্গা শারদ সম্মান (কলকাতা),ও মাসিক সময় এর সুর সাহিত্য পুরস্কার (বাংলাদেশ) সহ অসংখ্য সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।
তানিয়ার বেড়ে উঠা নওগাঁ সদর উপজেলার খাস-নওগাঁ মহল্লায় । বাবা আতাউর রহমান ও মা আঞ্জুমান আরা ছন্দার অনুপ্রেরণায় চতুর্থ শ্রেনীতে থাকা অবস্থায় জাতীয় বেশ কিছু পত্রিকায় কবিতা,গল্প, ভ্রমণকাহিনি প্রকাশিত হয়।
জানা যায়, পড়াশোনায় মেধাবী ছাত্রী ছিলেন তানিয়া। ২০০৫ সালে জুনিয়র বৃত্তি লাভ করেন ও ২০০৮ সালে এস.এস.সি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে রাজশাহী বোর্ড থেকে গোল্ডেন এ+ পেয়ে কৃতকার্য হয়। বাবা আতাউর বাংলাদেশ বন বিভাগের একজন ডেপুটি রেঞ্জ অফিসার তাই পরিবার নিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যাওয়ার সুবাদে প্রথম লিখালিখির হাতেখড়ি হয় তানিয়ার। জীবনের প্রথম কাব্যগ্রন্থ “নবযাত্রা″ ২০০৭ সালে প্রকাশ হয় এবং পাঠক সমাজে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করে এরপর দ্বাদশ শ্রেণিতে অধ্যায়নরত অবস্থায় দ্বিতীয় বই ” অপরাজিতা ” প্রকাশিত হয় যা পাঠক সমাজে বেশ সুনাম অর্জন করে।
ডা.তানিয়া রহমান বলেন- আমার বাবা ছিলেম ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসার, চাকুরির সুবাদে তিনি দেশের প্রায় সব বিভাগেই ছিলেন। বাবার সাথে আমার ও বিভিন্ন যায়গায় যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। আমি ছোট বেলা থেকেই ভ্রমণ পিপাসু তাই ভ্রমণ করতে করতে আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অবলোকন করতে করতে আমার লেখার অভ্যাস গড়ে উঠে। আমার দুটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে নবযাত্রা ও অপরাজিতা,নবযাত্রা কাব্যগ্রন্থটি একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় তখন আমার বয়স ছিল ১৫ বছর এবং দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয় তখন আমার বয়স ছিল ১৮ বছর। যখন আমি মেডিকেলে পড়াশোনা করি তখন খুবই ব্যস্ত হয়ে যাই তখন লেখালেখি থেকে একটু দূরে ছিলাম তবে আমার খুব ইচ্ছে আছে যে আগামী বছর থেকে ১টি হলেও কাব্যগ্রন্থ বা উপন্যাস প্রকাশ করার।
তিনি আরো বলেন,সম্মাননা পেলে মানুষের ভালো লাগে আমিও এর ব্যতিক্রম নয়। আমি বাংলাদেশ কলকাতা থেকে বেশকিছু সম্মাননা পেয়েছি। আমার পেশা যেহেতু চিকিৎসক তাই সেটা নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকি কিন্তু যখন দেখলাম দেশ এবং বিদেশে আমার লেখা নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে এবং মানুষ অনেক আগ্রহ নিয়ে পড়ছে তখন নিজের কাছে আরো বেশি ভালো লাগে। যখন দেখি লেখার গ্রহণযোগ্যতা আছে তখন লেখার আগ্রহটা বেড়ে যায়। আমার জীবনের শেষ দিন অব্ধি চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি লেখালেখি চালিয়ে যাবো। আমি পেশায় একজন গাইনী চিকিৎসক ও সার্জন, বলতে গেলে সব সময় ব্যস্ততায় কাটে। চিকিৎসা সেবা আমার পেশা আর লিখালিখি আমার নেশা এজন্য শত ব্যস্ততার মাঝেও লিখি। চেম্বারে যখন অবসর সময় পাই তখন লেখালেখি করি আবার বাসায় এলে ১ ঘন্টা সময় বের করে লেখার চেষ্টা করি। প্রতি সপ্তাহে জাতীয় পত্রিকায় আমার লেখা কবিতা প্রকাশিত হয়।
লেখালেখি নিয়ে পরিকল্পনা কি এমন প্রশ্নে তানিয়া বলেন, আমি যেহেতু একজন সার্জন তাই বেশিরভাগ অপারেশন থিয়েটারে থাকতে হয় তারপড়েও চেষ্টা করবো একহাতে ছুরি-কাঁচি অন্যহাতে কালি কলম নিয়ে আমি যেন জীবনের শেষ দিন অব্ধি এগিয়ে যেতে পারি। আমার লেখার মাধ্যমে মানুষ অনেক কিছু জানতে ও শিখতে পারবে।
তিনি রংপুর প্রাইম মেডিকেল কলেজ এন্ড হসপিটাল থেকে MBBS শেষ করে বর্তমানে চিকিৎসা সেবার সাথে জড়িত আছেন এবং ইন্টার্ন চিকিৎসক পরিষদ (ইচিপ) এ অর্থ বিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।#