মঙ্গলবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৪:০৩ পূর্বাহ্ন

কুমারখালীর সিঙাড়া বিক্রেতার মেয়ে পেলো মেডিকেলে চান্স!

কুষ্টিয়ার সময় ডেস্ক / ২৯৩১ বার নিউজটি পড়া হয়েছে
আপডেট টাইম: মঙ্গলবার, ৬ এপ্রিল, ২০২১, ৫:১২ অপরাহ্ন

ফুটপাতে শিঙাড়া বিক্রেতা হতদরিদ্র রমজান আলীর মেয়ে রাবেয়া আক্তার রুমি রংপুর মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছেন। প্রচণ্ড ইচ্ছা শক্তি, অদম্য মেধা ও পরিশ্রমের ফলে দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারে জন্ম নিয়েও দমে যাননি তিনি। পড়ালেখার মাধ্যমে মেধার স্ফূরণ ঘটিয়েছেন। তবে মেডিকেলে চান্স পেয়েও তার মুখের হাসি মলিন। পড়াশোনার খরচ কীভাবে চলবে তা নিয়ে দুশ্চিন্তার যেন শেষ নেই। এবার তাকে ভর্তি হতে হবে। কিন্তু প্রয়োজনীয় অর্থের অভাবে তার মেডিকেলে ভর্তি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

রাবেয়া আক্তার রুমি কুষ্টিয়ার কুমারখালী পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের শেরকান্দি গ্রামের রমজান আলীর বড় মেয়ে। তারা দুই বোন ও এক ভাই। ছোট বোন সপ্তম ও ছোট ভাই প্রথম শ্রেণিতে পড়ে।

রুমি ২০১৮ সালে কুমারখালী এমএন পাইলট মডেল হাই স্কুল থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি এবং কুমারখালী কলেজ থেকে ২০২০ সালে জিপিএ-৫ পেয়ে এইচএসসি পাস করেন। ছোট থেকেই তিনি লেখাপড়ায় খুব আগ্রহী ছিলেন। সব সময় ক্লাসে প্রথম হয়েছেন। কৃতিত্বের সঙ্গে সব পথ পাড়ি দিয়ে পড়াশোনায় সাফল্য এনেছেন তিনি।

পড়াশোনার প্রতি অদম্য আগ্রহের কারণেই শিক্ষার এ দুর্লভ সুযোগ পেয়েছেন রুমি। তাদের পরিবারে সদস্য সংখ্যা পাঁচজন। ফুটপাতে সিঙ্গারা বিক্রেতা রমজান আলীর সামান্য আয়ের ওপর নির্ভর করেই চলে সংসার। এ অবস্থায় মেয়ের পড়াশোনা চালিয়ে নিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে। এছাড়া করোনার কারণে আগের মতো আয় নেই রমজানের। তাই তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিত্তবান মানুষের কাছে সাহায্য-সহযোগিতা চেয়েছেন।

এমবিবিএস ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় সবাইকে তাক লাগিয়ে রাবেয়া আক্তার রুমি রংপুর মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছেন। তার এই সাফল্যের সংবাদে আনন্দ উৎসবের আমেজ বইছে কুমারখালীর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়। বন্ধু-বান্ধব ও সহপাঠীদের ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত হচ্ছেন রুমি। বাড়িতে ছুটে আসছেন গর্বিত শিক্ষক, আত্মীয়স্বজন ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।

চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে মহামারি করোনা পরিস্থিতিতে গত কয়েক মাস নিজ বাড়িতেই রাতদিন কঠোর পরিশ্রম করে মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করেন রুমি। তার সাফল্যে খুশি পরিবারের সবাই।

রাবেয়া আক্তার রুমি বলেন, ছোটবেলা থেকে আমার স্বপ্ন ছিল চিকিৎসক হওয়ার। মহান আল্লাহ সেই সুযোগ আমাকে করে দিয়েছেন। আমি রংপুর মেডিকেলে চান্স পেয়েছি। এজন্য আল্লাহর কাছে হাজার শুকরিয়া। আমি দেশবাসীর কাছে দোয়া চাই, আমি যেন পড়াশোনা শেষ করে ভালো একজন চিকিৎসক হতে পারি।

এক প্রশ্নের জবাবে রুমি বলেন, মেডিকেলে চান্স পাওয়ার পেছনে আমাকে প্রচুর পরিশ্রম করতে হয়েছে। মাসের পর মাস, বছরের পর বছর রাত জেগে পড়াশোনা করতে হয়েছে। প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠে পড়াশোনা করেছি। আমার পরিশ্রম, মা-বাবা ও শিক্ষকদের সহযোগিতায় আমার এই অর্জন।

তিনি বলেন, সব সময় আমাদের অর্থের অভাবে কষ্ট করতে হয়। আমার আব্বা শিঙাড়া বিক্রি করেন। প্রতিদিন দুপুর থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত কুমারখালী গোডাউন বাজার এলাকায় ফুটপাতে ভ্যানে করে শিঙাড়া বিক্রি করেন। সব শিঙাড়া বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়ে ঠিকমতো আমাদের সংসার চলে না। খুব কষ্ট করে আমার লেখাপড়া চলে। লেখাপড়া করে এ পর্যন্ত আসা সম্ভব হয়েছে অনেকের সহযোগিতার কারণে। স্কুলজীবনে স্কুলের শিক্ষকরা কলেজ জীবনে কলেজের শিক্ষকরা আমাকে সহযোগিতা করেছেন। তারা সহযোগিতা না করলে আমি এ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারতাম না। কলেজের অনেক বড় ভাইয়েরা আমাকে পুরাতন বই দিয়েছে পড়ার জন্য। সবাই খুব সহযোগিতা করেছেন।

রুমি বলেন, মেডিকেলে পড়াশোনা করতে অনেক টাকা দরকার। আমার বাবার পক্ষে এই খরচ বহন করা সম্ভব না। সরকারের কাছে আমি সহযোগিতা কামনা করছি। তা না হলে আমার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যেতে পারে।

তিনি বলেন, স্কুল-কলেজে পড়াশোনার সময় মন চাইলেও অনেক কিছু করতে পারতাম না। অর্থের অভাবে একসঙ্গে সব বই কিনতে পারতাম না। একটা একটা করে বই কিনতাম। আমাদের দেশে বইয়ের দাম অনেক বেশি। সরকারের উচিত এইচএসসি লেভেল পর্যন্ত বিনামূল্যে ছাত্রছাত্রীদের মাঝে বই বিতরণ করা। তাহলে দরিদ্র ছাত্রছাত্রীদের আমার মতো কষ্ট করতে হবে না।

মেধাবী এ ছাত্রী আক্ষেপ করে বলেন, মন চাইলে একটা ভালো পোশাক কিনতে পারতাম না। কারণ আমার জন্ম গরিবের ঘরে। মা-বাবার খুশি হয়ে যা কিনে দিতেন, আমি তাতেই খুশি থাকতাম। আমি কখনও কোনো কিছুর জন্য মা-বাবার ওপর চাপ দেইনি। আমার বাবা অনেক কষ্ট করে আমাকে পড়াশোনা করাচ্ছেন। যখন আমি প্রাইমারি এবং হাইস্কুলে পড়তাম তখন আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা আরও খারাপ ছিল।

মেডিকেলে চান্স পাওয়ার পর চিন্তিত হয়ে পড়েছেন রুমি। তিনি বলেন, এখন খুব দুশ্চিন্তা হচ্ছে। মেডিকেলের বইয়ের দাম বেশি। রংপুরে পড়াশোনা করতে গিয়ে সেখানে থাকা, খাওয়াসহ অনেক খরচ হবে। এত টাকা আমার বাবা কোথায় পাবে? কীভাবে পড়ালেখার খরচ চালাবে বুঝতে পারছি না। আমার বাবার পক্ষে সেই খরচ চালানো সম্ভব না। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি আকুল আবেদন জানাচ্ছি, তিনি যেন আমার লেখাপড়া চালানোর দায়িত্ব নেন। তার সহযোগিতা ছাড়া আমার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আমি সরকারের সহযোগিতায় পড়াশোনা সম্পন্ন করে ভালো একজন চিকিৎসক হতে চাই।

অনেক চিকিৎসককে নিয়ে গ্রামের মানুষের অভিযোগ আছে। অনেক চিকিৎসক আন্তরিকতার সঙ্গে রোগী দেখেন না, সময় দিতে চান না, রোগীর সমস্যার কথা শোনেন না, পাঁচ মিনিট সময় দিয়ে কোনোরকমে নামমাত্র সেবা দেয়, ভিজিট বেশি নেয়। এমন অনেক অভিযোগ আছে জানিয়ে রুমি বলেন, আমি নিজেও চিকিৎসকদের এ বদ অভ্যাসগুলো কাছে থেকে দেখেছি। আমি চেষ্টা করব রোগীদের আন্তরিকতার সঙ্গে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার। যাতে রোগী ও রোগীর স্বজনরা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। এছাড়া দরিদ্র ও অসহায় মানুষের পাশে আমি সব সময় থাকব। তাদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেব ইনশাআল্লাহ। দেশ ও দেশের পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য সারাজীবন কাজ করে যাব।

রুমির বাবা রমজান আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার মেয়ে মেডিকেলে চান্স পেয়েছে। এতে আমি খুব খুশি। খুব ভালো লাগছে। খুব আনন্দ লাগছে। এর ওপর আনন্দ লাগার আর কিছু নেই। মেয়েকে রংপুর মেডিকেলে ভর্তি করাতে হবে। কিন্তু আমার কাছে টাকা নেই। আমি শিঙাড়া বিক্রি করি। আমি গরীব মানুষ। দিন আনি দিন খাই। কোনোরকমে সংসার চলে। মেয়েকে ভর্তি করাব কীভাবে, তা বুঝে উঠতে পারছি না।

তিনি বলেন, করোনার মধ্যে এ বছর ও গত বছর আরও বেশি সমস্যায় পড়ে গেছি। বেচাকেনা কম। এজন্য এক বছরে অনেক টাকা ধার দেনাও করতে হয়েছে। এ অবস্থায় মেয়ের পড়াশোনার খরচ চালানো আমার পক্ষে সম্ভব না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার আকুল আবেদন, তিনি যেন আমার মেয়ের পড়াশোনার দায়িত্ব নেন। টেলিভিশন ও পত্রিকায় দেখি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাজার হাজার মানুষের দায়িত্ব নেন। তিনি যেন আমার মেয়ের দায়িত্ব নেয় এটা আমার অনুরোধ। তিনি এগিয়ে না আসলে আমার মেয়ের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যেতে পারে। আমার বিশ্বাস সরকারের সহযোগিতায় আমার মেয়ে একদিন বড় ডাক্তার হয়ে বের হয়ে আসবে। সে গরিবের কষ্ট বুঝবে। সে দিন আমার মেয়ে বিনামূল্যে গরীব মানুষকে চিকিৎসাসেবা দেবে।

কুমারখালী কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থী ঢাকা পোস্টকে বলেন, রুমি খুব মেধাবী। ছোট থেকেই সে পড়াশোনায় খুব ভালো। কলেজের প্রিয় মুখ ছিল। কলেজের শিক্ষক, ছাত্রছাত্রীরা সবাই তাকে খুব ভালোবাসে। সে মেডিকেলে চান্স পেয়ে আমাদের উজ্জ্বল করেছে। আমরা তার জন্য দোয়া করি, সে ভবিষ্যতে একজন মানবিক চিকিৎসক হোক। এলাকার ও কলেজের মুখ আরও উজ্জ্বল করুক। পড়াশোনা শেষে একজন ভালো চিকিৎসক হোক।

কুমারখালী উপজেলার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জুলফিকার আলী হিরো ঢাকা পোস্টকে বলেন, রুমি নামের যে মেয়েটি রংপুর মেডিকেলে চান্স পেয়েছে সে খুবই মেধাবী। ছোট থেকেই লেখাপড়ায় খুবই ভালো। তবে তার পরিবার দরিদ্র। রুমির বাবা ফুটপাতে ভ্যানের ওপর করে চপ শিঙাড়া ব্যবসা করে। কোনোরকমে তাদের সংসার চলে। মেয়েটি মেডিকেলে চান্স পাওয়ায় আমরা এলাকার মানুষ সবাই খুব আনন্দিত।

তিনি আরও বলেন, আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী না হওয়ায় তার বাবা মেয়েকে নিয়ে খুব চিন্তায় আছেন। মেডিকেলে পড়াশোনা করতে অনেক খরচ। সেই খরচ তার বাবার পক্ষে দেওয়া সম্ভব না। তাই আমি মনে করি দরিদ্র মেধাবী মেয়েটির পড়াশোনার দায়িত্ব সরকারের নেওয়া উচিত। আমরা স্থানীয়রা তাদের পাশে ছিলাম, আগামীতেও সহযোগিতা করব।

কুমারখালী কলেজের উপাধ্যক্ষ বিনয় কুমার সরকার বলেন, আমাদের কলেজের অত্যন্ত মেধাবী ছাত্রী ছিল রুমি। সে এই বছরে রংপুর মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছে। মেয়েটি দরিদ্র হওয়ায় আমরা কলেজের পক্ষ থেকে আমাদের কলেজে পড়াকালীন প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সার্বিক সহযোগিতা করেছি। বই কেনা থেকে শুরু করে সবক্ষেত্রে সার্বিক সহযোগিতা করেছি।

তিনি আরও বলেন, মেয়েটির পরিবার দরিদ্র। মেডিকেলে পড়াতে তার বাবার পক্ষে এত খরচ দেওয়া সম্ভব হবে না। এজন্য আমরা কলেজের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করার চেষ্টা করব। সরকারের পক্ষ থেকে যদি তার দায়িত্ব নেওয়া হয় তাহলে সে সুন্দরভাবে পড়াশোনা শেষ করতে পারবে।

জানতে চাইলে কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) রাজিবুল ইসলাম খান বলেন, আমি শুনেছি রুমি নামের কুমারখালী কলেজের এক মেধাবী ছাত্রী রংপুর মেডিকেল কলেজে চান্স পেয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে অসচ্ছল বা অভাবের কথা তারা যদি আমাদের জানান তাহলে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতার চেষ্টা করা হবে। টাকার অভাবে কোনো মেধাবী শিক্ষার্থীর পড়াশোনা বন্ধ হবে না। বিষয়টি আমরা গুরুত্বের সঙ্গে দেখব। অসচ্ছল ও মেধাবী ওই ছাত্রীর পড়ালেখার দায়িত্ব সরকার সরকারের পক্ষ থেকে নেওয়া হবে।

সূত্র : ঢাকা পোস্ট


আপনার মতামত লিখুন :

Comments are closed.

এ জাতীয় আরো খবর...

ইলেকট্রনিক-ভোটিং-মেশিনে-ইভিএম-ভোট-প্রদান-প্রক্রিয়া- বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন

Archives

SatSunMonTueWedThuFri
      1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031     
    123
45678910
252627282930 
       
28293031   
       
      1
2345678
16171819202122
23242526272829
30      
   1234
567891011
12131415161718
262728293031 
       
1234567
293031    
       
     12
       
  12345
6789101112
2728293031  
       
1234567
2930     
       
    123
45678910
       
    123
25262728   
       
21222324252627
28293031   
       
     12
31      
   1234
19202122232425
2627282930  
       
1234567
293031    
       
     12
24252627282930
       
  12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031  
       
      1
2345678
9101112131415
23242526272829
3031     
    123
45678910
11121314151617
18192021222324
252627282930 
       
 123456
14151617181920
21222324252627
28293031   
       
      1
2345678
9101112131415
30      
   1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031 
       
   1234
567891011
12131415161718
262728    
       
22232425262728
293031    
       
  12345
27282930   
       
      1
16171819202122
3031     
    123
11121314151617
       
 123456
78910111213
14151617181920
28293031   
       
   1234
567891011
19202122232425
2627282930  
       
1234567
15161718192021
293031    
       
     12
3456789
       
  12345
2728293031  
       
  12345
6789101112
13141516171819
2728     
       
      1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031     
   1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031 
       
282930    
       
     12
31      
   1234
567891011
12131415161718
19202122232425
2627282930  
       
1234567
891011121314
15161718192021
293031    
       

ইলেকট্রনিক-ভোটিং-মেশিনে-ইভিএম-ভোট-প্রদান-প্রক্রিয়া- বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন

এক ক্লিকে বিভাগের খবর